রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩০ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। আজ শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে জগন্নাথ হল অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেছেন, সেখানে শিক্ষক-ছাত্র-কর্মচারী প্রত্যেকের সর্বত্র অবক্ষয় দেখা যাচ্ছে। শিক্ষার কী মান ছিল, আজকে আমরা কোথায় চলে যাচ্ছি। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘এই সর্বোচ্চ ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে দু-একটি কথা বলতে চাই। সেটা হলো, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা, শিক্ষার মান। আমাদের এই যে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। সেখানে শিক্ষক-ছাত্র-কর্মচারী প্রত্যেকের সর্বত্র অবক্ষয় দেখা যাচ্ছে। আমরা এই রকম একটা প্রতিষ্ঠানকে কী রক্ষা করতে পারব?’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা শিক্ষাকে একটা ব্যবসা হিসেবে পরিণত করেছি। এই প্রতিষ্ঠানটা একটা মহান বিদ্যাপীঠ। আমার মহান বিদ্যাপীঠের সম্মানিত (অনারেবল) শিক্ষক যাঁরা; এই শিক্ষকেরা এখন নিজ প্রতিষ্ঠানে ক্লাস নেয়ার চেয়ে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস নেয়ার জন্য ঝুঁকে যান। আমার এই কথা শুনলে অনেকে অখুশি হবেন। কারণ যখন দেখি একজন ছেলে বা মেয়ে এই প্রতিষ্ঠান থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে আইন পেশায় যায়, তখন তাঁকে একটার বেশি দুটি প্রশ্ন করলে তাঁর মুখ থেকে কোনো কথা বের হয় না। খুবই কষ্ট লাগে।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার আলো জ্বালাতে হলে গুরুজনদের, যেভাবে আমরা শ্রদ্ধা করতাম এটা বজায় রাখতে হবে। আমাদের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ-তাঁদের কাছে অনুরোধ করব, গুরুজন হিসেবে আন্তরিকতার সঙ্গে, আমরা যেটা শিক্ষা পেয়েছি, সেই শিক্ষা তাদের দেয়ার জন্য।’ সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘বাঙালি জাতি এখন বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিক্ষা-প্রযুক্তি, অর্থনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ঈর্ষণীয় সাফল্যের দিকে ক্রমাগত এগিয়ে যাচ্ছে। এই উন্নয়ন যাত্রা কেউ পরাভূত করতে পারবে না। আমরা যে যেখানে থাকি না কেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে নিরন্তর কাজ করে যাব।’
অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি কানুতোষ মজুমদারের সভাপতিত্বে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, অধ্যাপক অজয় রায়, আওয়ামী লীগের নেতা অসীম কুমার উকিল, বিএনপির নেতা নিতাই রায় চৌধুরী, সাংসদ পঙ্কজ দেবনাথ, জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অসীম সরকার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জগন্নাথ হলের বিভিন্ন ব্যাচের অ্যালামনাইয়ের সদস্যরা তাঁদের পরিবার-পরিজন নিয়ে পুনর্মিলনীতে যোগ দেন। পুনর্মিলনীর প্রথম পর্বে আলোচনা সভা এবং দ্বিতীয় পর্বে সংগীতানুষ্ঠান ও র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয়।